- বয়েস কতো?
- কুড়ি।
- গুল মারবি না। এইচ আই ভি টেস্ট করানো আছে? ... টেস্ট রিপোর্ট ছাড়া করি না।
- তোর কন্ডোম আছে?
- সে তো সামনের দোকানেই কিনতে পাওয়া যাবে। টেস্ট রিপোর্টটা তো আর ডার্লিং, দোকানে কিনতে পাওয়া যায় না। নাকি সেটাও কিনে ফেলেছ?
ডলি পেছনে হাত বাড়ালো।
পিছনে কুঁজো হয়ে দাঁড়ানো কুতকুতে চোখের একটা লোক। জামা কাপড়ের অবস্থা সঙ্গীন। একটা হাত কিরকম বেঁকে শরীরের পেছন দিকে ঢুকে আছে। সারা দেহে কিরকম একটা যক্ষ্মার মত ছড়িয়ে পড়া দুর্বলতা। এরকম লোকের সাথে বেশীক্ষণ কথা চালানো মুশকিল।
কিন্তু সোমনাথ’কে বাধ্য হয়ে চালাতে হল। একে শুক্রবার, সকাল থেকে অফিসে গা ম্যাজ ম্যাজ করছে। তার ওপর লাঞ্চে ডবল মাটন বিরিয়ানিটা ঢেঁকুর তুলে তুলে রাতে আর কিছু খেতে দেবে বলে মনে হচ্ছে না। এই তো কন্ডোম কিনতে গিয়ে জেলুসিল খুঁজল। নেই।
শাল্লা … কাজের সময় একটা কিছু যদি পাওয়া যায়। পরের দোকানটায় কটা পুদিনহরা কিনে নিল সোমনাথ।
![]() |
http://jmalordy.files.wordpress.com/2011/12/f562.jpg |
ডলি অনেকক্ষণ হাত বাড়িয়ে আছে।
লোকটা তাও কিছু বলছে না। লোকটার চোখে শেষ বিকেলের রোদ্দুরের ঝিলিক দিয়ে গেল। নাকি ওটা ধূর্ততা ছিল? বোধহয় আরও কিছু পয়সা বাগাবার ফিকিরে আছে।
এসব কায়দা সোমনাথের ভালোই জানা আছে, এপাড়ায় তো আর কম দিন হল না। সেই কলেজে পড়তে থার্ড ইয়ারে প্রথম আসা। সেবারে অবশ্য পুরোটা সাহসে কুলোয় নি। দরজা দিয়ে ঘরের ভেতরে ঢুকেই বমি পেয়ে গেছিল।
কড়কড়ে ষাট টাকার গুনাগার।
বিবমিষা - সোমনাথের হঠাৎ মনে পড়ে গেল শব্দটা। আজকের দিনে অবশ্য এসব শব্দ বেশী কেউ ব্যবহার করে না। ইশকুলে সোমানাথ ছাত্র ভালো ছিল। নেহাত টুয়েল্ভের পরে আর পড়াশোনা করতে ইচ্ছে করলো না, তাই।
ডলি দুহাজার টাকা চেয়েছে। আসলে ডলি নয়, ওর ওই দালাল’টাই চেয়েছে। কলেজের মেয়েরা আজকাল সরাসরি কথা বলে না। চালু হয়ে গেছে। ইন্টারনেটে কাস্টমার খোঁজে। আর যারা একটু কমদামী তারা একটা সস্তার পিম্প নিয়ে ঘোরে।
ডলি একটু কম-দামী। চোখেমুখে ভদ্র ছাপ আছে, কিন্তু সে তো নিজেকে বিক্রি করার জন্যেই। সবাই জানে নিষ্পাপ মুখের দাম বেশী। সে যিশুই হোক আর হিসুই হোক।
সোমনাথ পনেরশো বলেছে।
এক পয়সা বেশী নয়।
- শালা, পনেরশো মধ্যে পাঁচশো তো তুই মারবি, জানি না ভেবেছিস?
দালালঃ দুহাজার লাগবে।
- চল্ ফোট। দেব না। ভাত ছড়ালে কাকের অভাব হয় না। এই পাশের গলিতেই পেয়ে যাব। অনেকদিনের চেনা, পনেরোশ’তেই পেয়ে যাব।
- দুহাজার লাগবে।
- এই হারামি, তুই অন্য কোন কথা জানিস না? একি কথা ভাঙ্গা রেকর্ডের মত কপচাস না মাইরি। মটকা পুরো গরম হয়ে যাচ্ছে।
- দুহাজার…
- দেখবি শালা, দেব না এমন … ভর সন্ধ্যেবেলা শালা পোদ মাড়াতে এসেছে … চল্ ফোট …
তখন ডলি এগিয়ে এসেছিল।
- ওতেই হবে। তবে অ্যাডভান্সড লাগবে।
- উরে বাবা, জাতে মাতাল, তালে তো একদম জাকির হোসেন। তা সুইটি তোমার ইয়েটা বেশ, আমার হেব্বি পছন্দ হয়েছে। বলছি কি, এ লাইনের নিয়মটা তো মাইরি তুমিও জানো … আম্মো জানি। কেন শুধুমুধু নকড়াবাজি করছ? হাফ আগে, হাফ কাজকম্মের পরে। হিন্দি সিনেমা দেখোনা নাকি?
দালাল মুখ বাড়িয়ে বলল, দু হাজার।
- অ্যাই মোলো যা, এবার কিন্তু হাত চলে যাবে মাইরি। এটা কি পিস রে ভাই, শুধু এক কথা … এক কথা …
ডলি দালালকে বলল, ছেড়ে দে, কিপটে মাল, পনেরশোর বেশী গলবে না।
- উরে শাল্লা, তুই তোকারি। প্রচুর রস তো রে। আমার পরে কি এই মালটার পালা নাকি মিস্? তা এ কত দেয়, দুহাজার, এক হাজার, নাকি একশো আট, দুবার ফ্রি?
ডলি তোর কি তাতে? আম খেতে এসেছিস আম খা, গাছের না তলার সে দিয়ে কি হবে।
সোমনাথঃ এই তো মুখ খুলেছো সোনা। আহা দিল জুড়িয়ে গেল। দেখি দেখি, টেস্টের রিপোর্ট’টা দেখি। রাতে আবার বাড়ি ফিরতে হবে, লাস্ট বাস মিস হয়ে গেলেল হেবি কেচ্ছা। তোদের সাথে রাত কাটাতে হবে।
ডলি এখনও হাত বাড়িয়ে আছে। দালালটা শালা কুতকুত করে তাকিয়ে আছে তো আছেই।
দে বে রিপোর্টটা, আর কতক্ষণ মাড়াবি?
এদিক ওদিক তাকিয়ে ডলি নিজেই দালালটার কাঁধ থেকে ঝোলা একটা দলাপাকানো কাগজ বার করলো।
- এটা কি? কীসব ওষুধের নাম লেখা - প্রেসক্রিপশন তো।
ডলি কাগজটা ছোঁ মেরে ছিনিয়ে নিল। আরেকটা কাগজ বেরোল। আরও নোংরা।
সোমনাথ খুঁটিয়ে দেখে নিল। কলকাতার বড় নার্সিং হোমের কাগজ। হুম্ সব কিছু ঠিকঠাকই আছে। ছবিটাও মিলছে।
- এ তো দু মাসের পুরনো রে। লেটেস্ট কপি কই?
- চার মাসে একবার করাই। প্রতি মাসে টেস্টের পয়সা কে দেবে বে, তোর বাপ?
এটা সোমনাথ ভালোই জানত। তাও গেয়ে রাখল আর কি। যদি আবার রেট বাড়িয়ে দেয়। সব মাগীর কাছে এইচ আই ভি রিপোর্ট থাকে না। তবে ইল্লি নাকি, দুহাজার সোমনাথ কিছুতেই দেবে না।
দালালটার দিকে ঘুরে বলল, এই নে হাজার রাখ। বেশী দিয়ে দিলাম। বাকিটা কাজের পরে। আর এটা একশো। টিপস্ না সোনা। হেবি ঠাণ্ডা দিয়েছে, একটা রামের নিপ নিয়ে আসবি। হ্যাঁ হ্যাঁ যা পাবি। একশো টাকায় আবার ব্র্যান্ড। দেখছিস না, পনেরশো টাকায় কিরকম রাস্তার মাল জুটেছে।
শোন, বোতলের মুখ যদি খোলা থাকে, প্যান্ট হলুদ করে দেব শালা, আমায় চেন না ... (চিল্লিয়ে) ... বরফ নিয়ে আসবি শালা ... ভেতরটা ঠাণ্ডা রাখতে হবে তো, নইলে বাইরেটা গরম করবো কি করে ...
--
আহ্ ... হাই তুলতে তুলতে সোমনাথ বেরিয়ে এল। বেশ জমেছিল খোঁয়ারিটা। কচি মেয়ে, অনেক দিন বাদে জমিয়ে ফুর্তি হল।
মিশমিশে কালো অন্ধকারের মধ্যে দালালটাকে আর অত খারাপ লাগছে না এখন। ইন ফ্যাক্ট দালালটা ভালোই কাজ করেছে। মাঝে মাঝে অন্য লোকে এসে শালা এত হল্লা করে, এত কষ্টের নেশা পুরো চৌপাট হয়ে যায়। দালালটা অন্তত অন্য জায়গায় ডিউটি মারতে যায় নি। শালাদের পয়সার খাঁই বড্ড বেশী।
সোমনাথ বেশ দরাজ হয়ে পড়ল।
এই নে বে, আরও হাজার। পুরো দুহাজার দিলাম। আজকে তোর লাকি ডে। অ্যাশ কর ব্যাটা, অ্যাশ কর … টলতে টলতে সোমনাথ গান ধরল, “এক হাজার ভি লে লো/ দো হাজার ভি লে লো/ ভালে ছিন লো মুঝসে মেরি জওয়ানি/ মাগর মুঝকো লটা দো হাড়কাটার সানি ... ”
লাস্ট বাস ছাড়ার আগে একবার হিসু করে নিতে হবে।
--
চল দাদা, কালকে তোর ডাক্তার দেখানোর জন্য দেড় দরকার ছিল, অনেক বেশী হয়ে গেছে। তুই কি ভাবলি? তুই দুই চাইলে ও দেবে না?! আমায় না ছুঁয়ে চলে যাবে ...
হুঁ কোন জগতে যে থাকিস ... আজকাল লোকের হাতে প্রচুর পয়সা ... সেদিন পেপারে দেখলি না সিক্সথ পে কমিশন না কি ছাই একটা বেরিয়েছে। সবার হাতে পয়সা এখন।
চ, আজকে একটু বড়লোকি করি। কে সি দাসে গিয়ে মিষ্টি খাই দুটো। ওই অল্প ভাজা চমচম'টা।
--
সোমনাথ থাকলে দেখতে পেত, এই অন্ধকার ম্রিয়মাণ নিয়নের আলোতেও দালালের চোখটা আবারো জ্বলে উঠল। শ্যাময় চামড়া দিয়ে ঘষা হীরের মত।
ফিজিক্স এটাকে বলে আভ্যন্তরীণ প্রতিফলন।
জীবন’ও তাই বলে।
Amake Somnath banie felechhis mone hochhe :P Jokes apart, darun hoyechhe eta!!!! Ekta obhiggota theke eta lekha mone hochhe, Protyeker ekbar kore ei gonikaloy e jaoya uchit jibon e.
ReplyDeletease pasher onek kichhu observe korlei mone hochhe chhoto goppo lekha ta chailye jete parbo .. som, JU te porte bodh hoy tor sathe ato kotha hoy ni, chup kothar madhyome joto holo .. besh jomechhe ..
Deletemonta kirom kharap hoye gelo.
ReplyDeletejak, kichhu akta chhap to porechhe .. sei dher ..
Deleteমন্তব্যহীন… কান্নাভেজা
ReplyDeletebyapartake sei tene tene science er domain e ene felchhi .. ke jane byaparta subidher hochhe ki na ..
ReplyDeleteSomajer akta dik somporke sroddha bere galo....sottie bolchi...aamar school er jatayater pothei north Kolkatar bikkhato "oi para" porto...borobor oder ghrina kortei sikhechi...sottie, orao je manush eta bhulei gechilam
ReplyDeletepeter day.. abar somajero day..
Deleteবাঃ, খুব সুন্দর লাগলো। :)
ReplyDeletearijit, pathok hisebe aponake dhore rakhte perechhi dekhchhi.. boddo anondo paoa galo..
Deletekothaye chile guru tumi kothaye chile. chaliye jao.
ReplyDeleteoi Som Sarkar tai je somnath tate bindu matro sandeho nei. School e thaktei dhamna chilo. oitei habe.
ei ase pashei chhilam..
Deletesom dhamna hote pare, kintu boddo creative.. creative manushjon ektu colorful hoy :P
lol colourfull to botei. Kalpona karo Som jachhe porone khadder er panjabi, hate rajonigondhar mala mechano. muke sugondhi tamak jukto pan. :P
DeleteJai hok tomake majhe majhe comment korte dekhi je lokjon lekha porche na bole. but amar mone haye aneklok ei tomar lekha niyomito pore. jamon amar email subscription kora ache, mail ei tomar lekha ta pore feli. hayeto blog e ese sob sameye comment kora haye na. chalieo jao. akhonkar potrika gulor pocha lekar theke tomar fresh lekhar swad anek besi.
ei je tomra megher arale theke comment na chhnure kete poro, eite motei suvo lokkhon noy .. amare to janti hobe amar lekha loke khay na mathay day .. comment na korle janti parbo kyamne?!
Deleteore pagla Surjo ki ar jane tar alo kato loker bhalo lage. se amni alo daye. abar alo thekei megher sristi. :P tomar nam o to anirban 2 e 2 e 4 kore phalo.
Deleteektu besi antlamo kore fellam :P
besh cinematic lekha hoyechhe!
ReplyDeletetumi to kotha rakhchho dekhi.. sotti i porchho..
Deleteআমিও পড়ছি। খুব ভালো লাগল গল্পটা, অনির্বাণ।
ReplyDeletetumi sotti porchho?.. achha biswas korlam :)
Deletedemanding partner hoy, demanding gan hoy... demanding writer hisebe ami ei jogote chhap rekhe jete chai..
swamiji bolechhen..
STABDHALIKHAN.
ReplyDeleteSTABDHALIKHAN.
ReplyDelete:-)
Delete