Thursday, February 11, 2016

মাথাও বাইরে, লেজ’ও বাইরে

কোন বাড়ি থাকে না সবাই গান গাইতে ভালোবাসে। তারপর দিদিগিরিতে গিয়ে বলে আমার বাড়িতে ছোটবেলা থেকেই গানের পরিবেশ রয়েছে।

আমাদের বাড়িতেও সেরকম একটা জিনিস রয়েছে।

আমাদের বাড়িতে সবাই কথা বলতে ভালোবাসে। কেউ কেউ আবার সাধারণ কথাই মনোগ্রাহী করে বলতে পারেন। আমার কাকু সেরকম। কাকু পিসীকে খাওয়া-দাওয়ার বিবরণ দিচ্ছেন। বাড়িতেই  খাওয়াদাওয়া হয়েছে। পিসী দিল্লি-নিবাসী, এসে উঠতে পারেন নি।

বিরতি’গুলো খুব ইম্পর্ট্যান্ট।  ঠিক ঠিক জায়গায় থেমে থেমে পড়তে হবে।
--

বুঝলি, প্রথমে হচ্ছে বড়ি দিয়ে লাল শাক ... তার পরে ... হচ্ছে ... শুক্তো ... ফ্যান্টাস্টিক শুক্তো। শুক্তো দিয়েই পেট ভরে গেছে। 
তার পরে ... হচ্ছে ... ডাল ... মুগের ডাল, আর ঝুরি ঝুরি আলু ভাজা ... বাদাম দেওয়া তার মধ্যে ... ভাজা।
তিন নম্বর হচ্ছে ... বিশাল একটা কাতলা মাছ ... মানে কাতলা মাছটা যে দিয়েছে, আমার প্লেটের বাইরে পড়ছিল মাছটা।
এবং প্র-চু-র তেল, পুরোটা খেতে পারলাম না। কেননা তাঁর পরবর্তী যা যা ছিল দেখে নিয়েছিলাম না, তাই ওটার ওপরে কন্সেন্ট্রেট করলাম না।

তারপরে হছে পাবদা মাছ। তার মাথাও বাইরে, লেজ’ও বাইরে।

তারপরে এলো গলদা চিংড়ির মালাইকারি। এতগুলো খাওয়ার পর ... সেই জহরদা একটা গল্প করত না ... ওদের কাজের একটা মাসি ছিল, তার বাচ্চাটা ... খেতে দিলে কিছুক্ষণ পরেই কাঁদতে থাকত। তো সবাই বলছে কাঁদে কেন ও? বলে ওর পেট ভরে গেছে ... কিন্তু খাবার রয়ে গেছে, সেইজন্য কাঁদছে ... খেতে পারছে না।
তারপরে হল চাটনি, পাঁপড়, দই। আর দইটা তো ফ্যান্টাস্টিক, দইটা খেয়ে কেরম একটা ইয়ে হল ... মানে সুপার ফ্যান্টাস্টিক দই।

তারপরে হচ্ছে মিষ্টি, তারপরে পান উইথ দাঁত খোঁচানো কাঠি।
--


টেকনোলজি সব সব সময় খারাপ নয়। ওপরের কথোপকথন হোয়াটসঅ্যাপে শুনে রাঙ্গাদাদু (যিনি কিনা বয়েস জনিত কারণে যথেষ্ট খেতে পারলেন না) স্বগতোক্তি করলেন, এত কিছু একবারে খেতে গেলে বুকের পাটা থাকতে হয়।

Tuesday, February 9, 2016

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯১৩ সালে

সম্বিত, সাত পাতা লেখার কথা ছিল। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯১৩ সালে নোবেল প্রাইজ গ্রহণ করেন। কই?
সম্বিত চুপ।

তিন পাতার পরে তুমি একটা কাকের ছবি এঁকেছ, নিচে লিখেছ ... কি লিখেছ এটা?
স্যার ... অমল কুমার চৌধুরী।

আঃ, আমার নাম জানতে চাই নি, কি লিখেছ সেটা বল?
স্যার, আপনার নাম'ই লিখেছি।

কেন?
না লিখলে আপনি রেগে যাবেন। আপনার মুখ মনে পড়ছিল, সেটা আঁকতে পারিনি। কাকের ছবি তো সোজা। আর নিচে আপনার নাম।

আর যেটা লেখার কথা ছিল, সেটা লেখো নি?
স্যার, ইচ্ছে করেছিল না। বারান্দায় একটা কাক ডাকছিল। কা কা কা ... ডেকেই যাচ্ছিল। আমি কাকটাকে দেখছিলাম।

হাতের লেখাটা মন দিয়ে অভ্যেস করলে আমার নামটা তোমায় পড়ে দিতে হত না।
--

সম্বিত এখন সকালে একটা কাঁথা স্টিচের ডায়েরী নিয়ে বসে এখন। সাথে সকালের চা। অফিস যাওয়ার আগে মিনিট পনেরো। কর্পোরেট অফিস, বস্টনে। বছর দুয়েক হল কান্ট্রি ম্যানেজার হয়েছে। কদিন বাদে হয়তো ভি পি।

কিছু লেখে - যা মনে পড়ে তাই। কিছু মনে না পড়লে, লালরঙা হ-য-ব-র-ল থেকে টোকে।

হাতের লেখা অভ্যেস করে সম্বিত।

বস্টনে কাক নেই। লেখা শেষ হলে আবার অমল কুমার চৌধুরী'র মুখটা মনে পড়ে।