অনেক কিছু বলার আছে। প্রেমিকাকে নয়, আপনাকে।
মানে লেখার আছে। কিন্তু কথা ইজ কথা। এইবারের কিস্তিতে বোস্টনে ঢুকতেই হবে। আগের কিস্তিগুলো এখানে একসাথে পরপর।
বোস্টনে ঢোকাটা, মানে, লিটারেলি নেমে হোটেলে ঢোকাটা তেমন ইন্টারেস্টিং হল না। বেশি কিছু না, ওভার একপেক্টেশনের দোষ।
মানে লেখার আছে। কিন্তু কথা ইজ কথা। এইবারের কিস্তিতে বোস্টনে ঢুকতেই হবে। আগের কিস্তিগুলো এখানে একসাথে পরপর।
বোস্টনে ঢোকাটা, মানে, লিটারেলি নেমে হোটেলে ঢোকাটা তেমন ইন্টারেস্টিং হল না। বেশি কিছু না, ওভার একপেক্টেশনের দোষ।
কোম্পানীতে যে ভদ্রলোক ভিসা সংক্রান্ত
খুঁটি-নাটি চেক করেন, ভিসা ইন্টারভিউ স্মুথ করার জন্য গাদা গাদা ফ্রি টিপ্স দেন - তাঁর একটা লব্জ ছিল।
ইউ এস সয়েল।
দ্য মোমেন্ট ইউ টাচ ইউ এস সয়েল, ইউ হ্যাভ টু হ্যাভ প্রপার ডকুমেন্ট্স, হুইচ শুড্ আন্ডাউটেডলি এক্সপ্লেন ইয়োর সোল রিজ্ন টু টাচ্ ইউ এস সয়েল। টাচ্ ব্যাপারটা এখানে খুব প্রয়োজনীয় - ভদ্রলোক 'টাচ্' কথাটা উচ্চারণ করার সময় হাল্কা ঝুঁকে পড়েন, আর হাত’টা সামান্য তুলে তর্জনী সো-জা সামনে বাড়িয়ে ধরেন। একটা চাবুকের মত শব্দটা শ্রোতার কানে নেমে আসে। এই ভাবে টাচ্ বলতে আমি একমাত্র একজনকেই দেখেছি থুড়ি শুনেছি।
হ্যাঁ, সুচিত্রা সেন।
তো ওই ডায়লগে আরেকটি শব্দ ও ভদ্রলোক একিরকম জোর দিয়ে নাটকীয় ভাবে বলতেন, সেইটে হচ্ছে ‘সয়েল’। এটার ডেলিভারি’টা অবশ্য মরগ্যান ফ্রিম্যানের মত। গুরুগম্ভীর অথচ হাল্কা কৌতুকময়।
বোস্টনে প্নেন যখন ইউ এস সয়েল টাচ্ করতে চলেছে, তখন শুধু একটা দৃশ্যই মন কাড়লো - অগুনতি সুদৃশ্য বিচ হাউস। ‘টু এন্ড হাফ মেন’ এ অ্যাডভার্টাইজমেন্ট থেকে ফেরত আসার সময় যেমন দেখায় তেমন। সারি সারি দোতলা বাড়ি, সামনে সুন্দর একফালি সবুজ - সেখানে বসে লোকে রোদ পোয়াতে পোয়াতে সমুদ্রের ঢেউ গুনছে।
বিচ হাউসে ভারতীয় দেখলাম না। খুব বেশী ওপর থেকে নয়, ভালোই টের পাওয়া যাচ্ছিল।
সেদিন কোন একটা হলিউডি সিরিয়ালে শুনছিলাম - ‘দ্য ফার্স্ট জেনারেশন অফ ব্ল্যাক মিলিওনেয়ারস্ হ্যাভ স্টার্টেড ডায়িং’। ওয়েস্ট উইং এ বোধ হয়। সেই হিসেবে ইউ এস এর ভারতীয় মিলিওনেয়ার’রা বোধহয় এখনো রিটায়ার করতে শুরু করে নি।
এয়ারপোর্ট থেকে বেরোনোর পরেই ট্যাক্সি নেওয়া হল। অভিজ্ঞতা দেশের মতই - ইন ফ্যাক্ট দেশের থেকে খারাপ। গাড়ির সুইচ অন্ করেই ড্রাইভার সায়েব জানালেন তিনি মিটারে যাবেন না।
ড্রাইভার সায়েব কথাটা লিখে বেজায় ফুর্তি হল - ভাষার যথাযথ ব্যবহার :)
ইন ফ্যাক্ট চুক্তি করে গেলে যা হয় (উইকিট্রাভেলের মতে) তাঁর থেকে তিনি পনেরো ডলার বেশী নেবেন।
সেই মুহূর্তে বিধাননগর পুলিশ’কে বড্ড মিস করছিলাম। থাকতো একটা প্রি-পেড পুলিশ বুথ - যেখানে টাকা দিলে রিসিটে লেখা থাকবে, গন্তব্যস্থানে পৌঁছে তবেই একটা নির্দিষ্ট অংশ ছিঁড়ে ড্রাইভার সায়েবের হাতে দেবেন। যাগ্গে, তখন আর ঝগড়া করার শক্তি নেই - দেহটা কোনোমতে এলিয়ে দিয়ে হাত নাড়লুম।
মোটেল সিক্সে পৌঁছতে পৌঁছতে নতুন শহরের আবেশ অনেকটাই কেটে গেল। নেক্সট্ উত্তেজনা এম আই টি - যেখানে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়লে বিশ্বকর্মা আর ফিজিক্স পড়লেই ফাইনম্যান। ফাইনম্যানের নাম শুনেছেন তো? না শুনে থাকলে এখনই গুগল করতে বসবেন না। শুধু এটুকুই জেনে নিন - ক্যমুনিস্টদের মধ্যে যেমন চে, বিজ্ঞানীদের মধ্যে তেমন ফাইনম্যান।
ইউ এস সয়েল।
দ্য মোমেন্ট ইউ টাচ ইউ এস সয়েল, ইউ হ্যাভ টু হ্যাভ প্রপার ডকুমেন্ট্স, হুইচ শুড্ আন্ডাউটেডলি এক্সপ্লেন ইয়োর সোল রিজ্ন টু টাচ্ ইউ এস সয়েল। টাচ্ ব্যাপারটা এখানে খুব প্রয়োজনীয় - ভদ্রলোক 'টাচ্' কথাটা উচ্চারণ করার সময় হাল্কা ঝুঁকে পড়েন, আর হাত’টা সামান্য তুলে তর্জনী সো-জা সামনে বাড়িয়ে ধরেন। একটা চাবুকের মত শব্দটা শ্রোতার কানে নেমে আসে। এই ভাবে টাচ্ বলতে আমি একমাত্র একজনকেই দেখেছি থুড়ি শুনেছি।
হ্যাঁ, সুচিত্রা সেন।
তো ওই ডায়লগে আরেকটি শব্দ ও ভদ্রলোক একিরকম জোর দিয়ে নাটকীয় ভাবে বলতেন, সেইটে হচ্ছে ‘সয়েল’। এটার ডেলিভারি’টা অবশ্য মরগ্যান ফ্রিম্যানের মত। গুরুগম্ভীর অথচ হাল্কা কৌতুকময়।
বোস্টনে প্নেন যখন ইউ এস সয়েল টাচ্ করতে চলেছে, তখন শুধু একটা দৃশ্যই মন কাড়লো - অগুনতি সুদৃশ্য বিচ হাউস। ‘টু এন্ড হাফ মেন’ এ অ্যাডভার্টাইজমেন্ট থেকে ফেরত আসার সময় যেমন দেখায় তেমন। সারি সারি দোতলা বাড়ি, সামনে সুন্দর একফালি সবুজ - সেখানে বসে লোকে রোদ পোয়াতে পোয়াতে সমুদ্রের ঢেউ গুনছে।
বিচ হাউসে ভারতীয় দেখলাম না। খুব বেশী ওপর থেকে নয়, ভালোই টের পাওয়া যাচ্ছিল।
সেদিন কোন একটা হলিউডি সিরিয়ালে শুনছিলাম - ‘দ্য ফার্স্ট জেনারেশন অফ ব্ল্যাক মিলিওনেয়ারস্ হ্যাভ স্টার্টেড ডায়িং’। ওয়েস্ট উইং এ বোধ হয়। সেই হিসেবে ইউ এস এর ভারতীয় মিলিওনেয়ার’রা বোধহয় এখনো রিটায়ার করতে শুরু করে নি।
এয়ারপোর্ট থেকে বেরোনোর পরেই ট্যাক্সি নেওয়া হল। অভিজ্ঞতা দেশের মতই - ইন ফ্যাক্ট দেশের থেকে খারাপ। গাড়ির সুইচ অন্ করেই ড্রাইভার সায়েব জানালেন তিনি মিটারে যাবেন না।
ড্রাইভার সায়েব কথাটা লিখে বেজায় ফুর্তি হল - ভাষার যথাযথ ব্যবহার :)
ইন ফ্যাক্ট চুক্তি করে গেলে যা হয় (উইকিট্রাভেলের মতে) তাঁর থেকে তিনি পনেরো ডলার বেশী নেবেন।
সেই মুহূর্তে বিধাননগর পুলিশ’কে বড্ড মিস করছিলাম। থাকতো একটা প্রি-পেড পুলিশ বুথ - যেখানে টাকা দিলে রিসিটে লেখা থাকবে, গন্তব্যস্থানে পৌঁছে তবেই একটা নির্দিষ্ট অংশ ছিঁড়ে ড্রাইভার সায়েবের হাতে দেবেন। যাগ্গে, তখন আর ঝগড়া করার শক্তি নেই - দেহটা কোনোমতে এলিয়ে দিয়ে হাত নাড়লুম।
মোটেল সিক্সে পৌঁছতে পৌঁছতে নতুন শহরের আবেশ অনেকটাই কেটে গেল। নেক্সট্ উত্তেজনা এম আই টি - যেখানে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়লে বিশ্বকর্মা আর ফিজিক্স পড়লেই ফাইনম্যান। ফাইনম্যানের নাম শুনেছেন তো? না শুনে থাকলে এখনই গুগল করতে বসবেন না। শুধু এটুকুই জেনে নিন - ক্যমুনিস্টদের মধ্যে যেমন চে, বিজ্ঞানীদের মধ্যে তেমন ফাইনম্যান।
আর হ্যাঁ, বিশ্বাসঘাতক'টা জলদি কিনে নিন। নারায়ণ স্যান্যাল।
![]() |
ম্যানহাটন প্রোজেক্টের কর্মীদের চেতাব্নি |
এম আই টি তে প্রচুর ডিপার্টমেন্ট - সেখানকার ছাত্র-ছাত্রী, প্রফেসরদের চোখ-ধাঁধাঁনো মনভোলানো কীর্তি সর্বত্র বিরাজমান এটা নিশ্চয়ই আর সাতকাহন করে বলার দরকার নেই। বরং এমআইটি’তে যে দুটো ব্যাপার সব চেয়ে আলাদা লাগলো তাদের কথা বলি।
বেশ বুঝলাম, ইউরোপের বাঘা বাঘা মিউজিয়াম ঘুরে একটা বেশ লুকোনো শ্লাঘা তৈরি হয়েছিল। আরে বাবা, মিউজিয়াম মানে তো পুরনো জিনিস - তিনশো, চারশো পাঁচশো, দুহাজার - আরও বেশী। তারপর সেসব প্রচুর খরচা করে, তোড়জোড় করে প্রিজার্ভ করা।
আমেরিকায় কই এসব?
তাও হত হার্ভার্ড, বোঝা যেত - মাত্র দুটো মেট্রো স্টেশন পরে, কিন্তু আসলে পাঁচশোটা বছর পরে। ইন ফ্যাক্ট এমআইটির এক লিঁয়াজো অফিসার, যিনি নিজে কিনা এমআইটির পি এইচ ডি পরিষ্কার জানালেন - আমরা হাবভাব করি যে হার্ভার্ডের সাথে কম্পিট করি, কিন্তু আসলে ওরা আমাদের অনুকম্পার চোখে দেখে।
এমআইটি তো আড়াইশো বছরের মোটে। তার মধ্যে পুরোটা আবার সাফল্যমণ্ডিত নয়। সেকেন্ড ওয়র্ল্ড ওয়ারের সময় খ্যাতির চূড়ায় - এবং তারপর সচিনের মত স্ট্যান্ডার্ডটা প্রায় পৌনে শতাব্দী ধরে রাখা।
তাতে তো আর মিউজিয়াম হয় না রে বাবা।
ডাহা ভুল কথা - হয়।
এম আই টি মিউজিয়াম। একটা দোতলা আনইম্প্রেসিভ বাড়ি - তার আবার কিছু ঘরে ক্লাস হয়।
কিন্তু আপনি যদি বিজ্ঞানের ছাত্র হয়ে থাকেন, মানে সত্যি সত্যি ভালোবেসে হয়ে থাকেন, আঙ্গুলে গোমেদ আংটি না পরার কারণ বুঝে থাকেন, তাহলে আপনি এই মিউজিয়ামকে নিশ্চিত ভালোবেসে ফেলবেন।
বিজ্ঞানের ছাত্র না হলেও পারবেন, যদি লজিক্যাল থিঙ্কিং এ আপনার মতি থাকে। যদি আপনি বিশ্বাস করেন যে মাইকেল এঞ্জেলোর পিয়েত্তা যতটা চিত্তাকর্ষক, মানুষের হাতে তৈরি ডাক্তার (সার্জেন) রোবটও তাঁর থেকে কিছু কম নয়।
এম আই টি মিউজিয়াম প্রথম আমাকে জানালো যে এক বছরের পুরনো কাজ না হয়েও মানুষের কোন একটা সৃষ্টি মিউজিয়ামে ঢুকে পড়তে পারে। ইন ফ্যাক্ট, ভবিষ্যতের সম্ভাবনাও মিউজিয়ামে স্থান করে নিতে পারে।
২০১৬ তে পি এইচ ডি শেষ হবে, সেই কাজও ঢুকে পড়তে পারে। যেমন ধরুন কম্পিউটর সাউন্সের ছাত্রী ডানা। তাঁর প্রোজেক্টের নাম টি-পট।
যখন দুঃখ ঘনিয়ে আসে, পরিবেশ অসহ্য হয়ে ওঠে, কারোর সাথে কথা বলতে ইচ্ছে করে না, কাউকে ডাকতে অব্দি ইচ্ছে করে না, পাছে সে ফুঁপিয়ে ওঠা কান্নাটা দেখে ফেলে, তখন যদি একটা টিপটে করে, অমানুষ রোবট আলতো করে আপনার সামনে চায়ের কাপ ভরে দিত - কেমন লাগতো? মেশিনের সাহায্যে যদি একাকীত্ব কাটানো যেত?
প্লিজ, ডানার নিজের ভাষায় প্রোজেক্ট সামারি পড়ে নিন। ইচ্ছে করলে মেয়েটি সাহিত্যেও পি এইচ ডি করতে পারতো এরকম একটা বিশ্বাস হয়তো আপনার মধ্যে জন্মাবে।
আপনি তো ছবি তুলতে ভালোবাসেন। ডি এস এল আর নিয়ে লাফিয়ে ঝাঁপিয়ে, লেন্স বদল করে, বার্স্ট মোডে ছবি তুলে, সেই কাঙ্ক্ষিত মোমেন্ট তুলে ধরায় পারদর্শী হয়ে উঠেছেন। আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব মহলে নাম ছড়িয়ে পড়েছে। অথবা নতুন স্মার্টফোন দিয়েই ছবি তুলেই সবাইকে চমকে দিচ্ছেন।
ব্যঙ্গ করছি না, আম্মো এসব করি। কিন্তু জানেন কি, ছবি তোলার কাজটা আদপে কত শক্ত ছিল? না না, দাদুর আমলে ওয়ান শটার ক্যামেরার কথা বলছি না। বলছি আরও পুরনো একটা সময়ের কথা যখন কিনা ফটোগ্রাফি কথাটাই তেমন ভাবে চালু হয় নি, ক্যামেরা তো দূরস্থান।
ফটোগ্রাফি বলত না তো কি বলতো? বলতো Daguerreotype। এইটেই এই মিউজিয়ামের সব থেকে পুরনো গল্প।
Daguerreotype ব্যাপারটা খায় না মাথায় দেয়, সেটা উইকিতে পড়ে নেবেন প্লিজ। পদ্ধতিটা এতোই খরচাবহুল ছিল যে, পরবর্তী কালে বাজারের চাপে উঠে যায়। আজ থেকে দুশো বছর পরে কোন ব্লগার ফিল্ম ফটোগ্রাফি নিয়ে লিখলে ব্যাপারটা যেমন দাঁড়াবে আর কি।
কিন্তু একটা পার্থক্য থেকে যাবে। প্রথম কোন কিছুর ব্যাপার স্যাপার’ই আলাদা। ওই যে বুক ফুলিয়ে লেখা, “only correct way to produce correct likeliness” - লক্ষ্য করুন দুবার 'কারেক্ট' - অর্থাৎ কিনা আপনি যতই সেরা শিল্পী দিয়ে পোর্ট্রেট আঁকান না কেন, আমাদের তোলা ছবির মত হুবহু মিলিয়ে দিতে পারবেন না।
এই কথাটা প্রথম Daguerreotype ওলা রাই বলতে পেরেছিল।
কুল জিনিস নেই কিছু? মানে সাই-ফাই টাইপ? আছে তো -
ব্ল্যাক ফ্যালকন।
কি? নামেই ছিটকে গেলেন তো? ব্ল্যাক ফ্যালকন হলেন গিয়ে এমন সার্জেন, শত টেনশনেও যার হাত কাঁপবে না। অনায়াস দক্ষতায় কাঁচি থেক টুইজারে অবাধ বিচরণ করতে পারেন ইনি। অখিল মাধানি '৯৮ সালে বানিয়েছেন এটা।
ফ্লোরের একটা অংশের নাম রিজনিং এন্ড লার্নিং। বোঝা গেল এই বিষয় নিয়ে রিসার্চ খুব বেশী বছর শুরু হয় নি, এমনকি রোবটেরও পরে। আগে তো রোবট, তাঁর পরে কিনা বুদ্ধিমান, মননশীল রোবট। এখানে অনেক তত্ত্ব কথাই বলা আছে, যার মধ্যে একটি অটোমেটিক চ্যাট করার যন্ত্র যে দুনিয়ার সব কিছু জানে, তৎসত্ত্বেও নম্র ভাবে আপনার ইমোশনাল প্রশ্নের জবাব দেয়। সিরির বড়দা আর কি।
কিন্তু এর থেকে বেশী চোখ টানলো একটা ফাঁকা বোর্ড - সামনে পেন্সিল আর কাগজ রাখা। দর্শকদের চাহিদা-কাম-কমেন্টস জানানোর জন্য।
সেখানে আরও অনেকের মতোই জিয়ান হু ওরফে আদেলা তার স্বপ্নের রোবটের দাবি জানিয়ে গেছে।
বেশী দাবি না - দুটো করে হাত, পা, একটাই মাথা - মাথাটা একটা বিশাল ডিসপ্লে। হাত পা গুলো স্প্রিং দিয়ে দেহের সাথে জোড়া। দেহ বলতে অবশ্য শুধুই পেট। পেটের মধ্যে কি কি থাকবে খুব স্পষ্ট করে লেখা - চিপ্স, জুস, কোক ইত্যাদি। ডান হাতে চাই পপ কর্ণ বানানোর মেশিন আর বাঁ হাতে শুধুই গরম গরম ধোঁয়া ওঠা কফি।
ব্যস, মাত্র এইটুকু। তবে অত্যাধুনিক রোবট হলেও মাথায় এক জোড়া অ্যান্টেনা থাকতে হবে - আমি জিয়ান'কে কল্পনা করছিলাম। য়র মাথাতেও কি বেশ টেনে দুটো বেণী বাঁধা আছে?
এই রকম ক্লিয়ার এবং কিলার স্পেসিফিকেশনের পরে জিয়ানের রোবট বানাতে এমআইটির জাস্ট কোন অসুবিধেই হওয়া উচিত নয়। তাও পাছে ভুল হয়ে যায়, জিয়ান খুব পরিষ্কার করে জানিয়ে দিয়েছে রোবট'টা বেজিং এ পৌঁছে দিলে বড্ড ভালো হয়।
ইমেজ প্রসেসিং এর অনেকরকম অ্যাপ্লিকেশনের মধ্যে একটা ডেমো ছিল, যাতে একটা মুভিং সাদা কনভেয়ার বেল্টের ওপরে আপনাকে পকেট থেকে বের করে কোন একটা জিনিস রেখে দিতে হবে। স্ক্যানারে ছবি ওঠার পরে, কম্পিউটার ঘোষণা করবে দর্শক’রা ওই নির্দিষ্ট জিনিসের সাথে আর কি কি নিয়ে এই মিউজিয়ামে ঢোকেন। শুধু ঘোষণাটা স্পীকার না হয়ে সুপার-ইম্পোজ করে কনভেয়ার বেল্টের ওপরে করা হবে। এবার নিশ্চয়ই বোঝা যাচ্ছে, কনভেয়ার বেল্ট’টা সাদা কেন?
আমি যেমন জানতে পারলাম, চাবির সাথে লোকে সাধারণত সানগ্লাস আর পার্সের সাথে ছেঁড়া মেন্টোসের প্যাকেট নিয়ে আসে।
এক হাজার শব্দ অনেকক্ষণ আগে পেরিয়ে গেছি, অতএব পি-ছে মো-ড়, বি-ই-ই-শ্রা-ম।
তাতে তো আর মিউজিয়াম হয় না রে বাবা।
ডাহা ভুল কথা - হয়।
এম আই টি মিউজিয়াম। একটা দোতলা আনইম্প্রেসিভ বাড়ি - তার আবার কিছু ঘরে ক্লাস হয়।
কিন্তু আপনি যদি বিজ্ঞানের ছাত্র হয়ে থাকেন, মানে সত্যি সত্যি ভালোবেসে হয়ে থাকেন, আঙ্গুলে গোমেদ আংটি না পরার কারণ বুঝে থাকেন, তাহলে আপনি এই মিউজিয়ামকে নিশ্চিত ভালোবেসে ফেলবেন।
বিজ্ঞানের ছাত্র না হলেও পারবেন, যদি লজিক্যাল থিঙ্কিং এ আপনার মতি থাকে। যদি আপনি বিশ্বাস করেন যে মাইকেল এঞ্জেলোর পিয়েত্তা যতটা চিত্তাকর্ষক, মানুষের হাতে তৈরি ডাক্তার (সার্জেন) রোবটও তাঁর থেকে কিছু কম নয়।
এম আই টি মিউজিয়াম প্রথম আমাকে জানালো যে এক বছরের পুরনো কাজ না হয়েও মানুষের কোন একটা সৃষ্টি মিউজিয়ামে ঢুকে পড়তে পারে। ইন ফ্যাক্ট, ভবিষ্যতের সম্ভাবনাও মিউজিয়ামে স্থান করে নিতে পারে।
২০১৬ তে পি এইচ ডি শেষ হবে, সেই কাজও ঢুকে পড়তে পারে। যেমন ধরুন কম্পিউটর সাউন্সের ছাত্রী ডানা। তাঁর প্রোজেক্টের নাম টি-পট।
যখন দুঃখ ঘনিয়ে আসে, পরিবেশ অসহ্য হয়ে ওঠে, কারোর সাথে কথা বলতে ইচ্ছে করে না, কাউকে ডাকতে অব্দি ইচ্ছে করে না, পাছে সে ফুঁপিয়ে ওঠা কান্নাটা দেখে ফেলে, তখন যদি একটা টিপটে করে, অমানুষ রোবট আলতো করে আপনার সামনে চায়ের কাপ ভরে দিত - কেমন লাগতো? মেশিনের সাহায্যে যদি একাকীত্ব কাটানো যেত?
প্লিজ, ডানার নিজের ভাষায় প্রোজেক্ট সামারি পড়ে নিন। ইচ্ছে করলে মেয়েটি সাহিত্যেও পি এইচ ডি করতে পারতো এরকম একটা বিশ্বাস হয়তো আপনার মধ্যে জন্মাবে।
![]() |
টি-পট, ডানার প্রোজেক্ট |
ব্যঙ্গ করছি না, আম্মো এসব করি। কিন্তু জানেন কি, ছবি তোলার কাজটা আদপে কত শক্ত ছিল? না না, দাদুর আমলে ওয়ান শটার ক্যামেরার কথা বলছি না। বলছি আরও পুরনো একটা সময়ের কথা যখন কিনা ফটোগ্রাফি কথাটাই তেমন ভাবে চালু হয় নি, ক্যামেরা তো দূরস্থান।
ফটোগ্রাফি বলত না তো কি বলতো? বলতো Daguerreotype। এইটেই এই মিউজিয়ামের সব থেকে পুরনো গল্প।
Daguerreotype ব্যাপারটা খায় না মাথায় দেয়, সেটা উইকিতে পড়ে নেবেন প্লিজ। পদ্ধতিটা এতোই খরচাবহুল ছিল যে, পরবর্তী কালে বাজারের চাপে উঠে যায়। আজ থেকে দুশো বছর পরে কোন ব্লগার ফিল্ম ফটোগ্রাফি নিয়ে লিখলে ব্যাপারটা যেমন দাঁড়াবে আর কি।
কিন্তু একটা পার্থক্য থেকে যাবে। প্রথম কোন কিছুর ব্যাপার স্যাপার’ই আলাদা। ওই যে বুক ফুলিয়ে লেখা, “only correct way to produce correct likeliness” - লক্ষ্য করুন দুবার 'কারেক্ট' - অর্থাৎ কিনা আপনি যতই সেরা শিল্পী দিয়ে পোর্ট্রেট আঁকান না কেন, আমাদের তোলা ছবির মত হুবহু মিলিয়ে দিতে পারবেন না।
এই কথাটা প্রথম Daguerreotype ওলা রাই বলতে পেরেছিল।
![]() |
Daguerreotype |
কুল জিনিস নেই কিছু? মানে সাই-ফাই টাইপ? আছে তো -
ব্ল্যাক ফ্যালকন।
কি? নামেই ছিটকে গেলেন তো? ব্ল্যাক ফ্যালকন হলেন গিয়ে এমন সার্জেন, শত টেনশনেও যার হাত কাঁপবে না। অনায়াস দক্ষতায় কাঁচি থেক টুইজারে অবাধ বিচরণ করতে পারেন ইনি। অখিল মাধানি '৯৮ সালে বানিয়েছেন এটা।
![]() |
ব্ল্যাক ফ্যালকন |
কিন্তু এর থেকে বেশী চোখ টানলো একটা ফাঁকা বোর্ড - সামনে পেন্সিল আর কাগজ রাখা। দর্শকদের চাহিদা-কাম-কমেন্টস জানানোর জন্য।
সেখানে আরও অনেকের মতোই জিয়ান হু ওরফে আদেলা তার স্বপ্নের রোবটের দাবি জানিয়ে গেছে।
বেশী দাবি না - দুটো করে হাত, পা, একটাই মাথা - মাথাটা একটা বিশাল ডিসপ্লে। হাত পা গুলো স্প্রিং দিয়ে দেহের সাথে জোড়া। দেহ বলতে অবশ্য শুধুই পেট। পেটের মধ্যে কি কি থাকবে খুব স্পষ্ট করে লেখা - চিপ্স, জুস, কোক ইত্যাদি। ডান হাতে চাই পপ কর্ণ বানানোর মেশিন আর বাঁ হাতে শুধুই গরম গরম ধোঁয়া ওঠা কফি।
ব্যস, মাত্র এইটুকু। তবে অত্যাধুনিক রোবট হলেও মাথায় এক জোড়া অ্যান্টেনা থাকতে হবে - আমি জিয়ান'কে কল্পনা করছিলাম। য়র মাথাতেও কি বেশ টেনে দুটো বেণী বাঁধা আছে?
এই রকম ক্লিয়ার এবং কিলার স্পেসিফিকেশনের পরে জিয়ানের রোবট বানাতে এমআইটির জাস্ট কোন অসুবিধেই হওয়া উচিত নয়। তাও পাছে ভুল হয়ে যায়, জিয়ান খুব পরিষ্কার করে জানিয়ে দিয়েছে রোবট'টা বেজিং এ পৌঁছে দিলে বড্ড ভালো হয়।
ইমেজ প্রসেসিং এর অনেকরকম অ্যাপ্লিকেশনের মধ্যে একটা ডেমো ছিল, যাতে একটা মুভিং সাদা কনভেয়ার বেল্টের ওপরে আপনাকে পকেট থেকে বের করে কোন একটা জিনিস রেখে দিতে হবে। স্ক্যানারে ছবি ওঠার পরে, কম্পিউটার ঘোষণা করবে দর্শক’রা ওই নির্দিষ্ট জিনিসের সাথে আর কি কি নিয়ে এই মিউজিয়ামে ঢোকেন। শুধু ঘোষণাটা স্পীকার না হয়ে সুপার-ইম্পোজ করে কনভেয়ার বেল্টের ওপরে করা হবে। এবার নিশ্চয়ই বোঝা যাচ্ছে, কনভেয়ার বেল্ট’টা সাদা কেন?
আমি যেমন জানতে পারলাম, চাবির সাথে লোকে সাধারণত সানগ্লাস আর পার্সের সাথে ছেঁড়া মেন্টোসের প্যাকেট নিয়ে আসে।
![]() |
কোনটা আসল আর কোনটা সুপার ইম্পোজ বোঝা যাচ্ছে কি? (না বোঝা গেলে সহজ হিন্টঃ কায়া থাকলে তবেই না ছায়া থাকবে!) |
![]() |
তবে বিশ্রাম শুধু আমার, আপনার নয়, কিরকম লাগছে জানাবেন।
প্রশংসাটা বারবার একইভাবে
ReplyDeleteকরতে ভাল লাগছে না, শুধু বলি, লেখার পরের কিস্তির জন্য অপেক্ষা করছি।
এবার প্রুফ নিয়ে-
receipt এর উচ্চারণ 'রিসিট'। zagge লিখলে সেটা 'যাজ্ঞে' হয়ে যায়। zag'ge লিখো।
hya, recipt ta thik korte hobe. inriji kotha bangla y elkhar somoy guliye jay. jagge tao thik kore debo.
Deleteaamar to besh bhaloi laglo MIT er kotha pore....akta jinis realize korlam, aami motei USA pagolo noi, bhalo university pagol :)
ReplyDeletethik hay madam apnar kotha roilo .. amar kothao roilo .. ebar ekta somjhota kore nilam .. amra USA r valo univ .. ei niye US style e akta high five .. amar ager company te akta lok khusi holeo dito .. byata american chhilo ..
Deletetui o pore bolbi, "amar ager company te akta lok ...." :-)
Kolkata chhorke kabhi kahin pe nahin jayenge...mane majhe majhe porte torte chhara...tarpor aabar back to basa...ei company er lok tar under ei...:)...se tomake jalai bolo aar jai bolo 3:)
DeleteAnekgulo anubhuti holo eksaathe tea-pot aar robot-er daabi dekhe, porte thhakbo..aamaar bor Suvarup toke chene bollo :)
ReplyDeleteanasuya(di?!) cup-kothay swagoto .. niyomito porte thako .. valo kharap jai laguk janio ..
ReplyDeletesuvarup dar sathe ak kale prochur slogan merechhi .. kobe je oder batch tar sathe abar dekha hobe .. adou hobe ki na ke jane ..